ট্রেড ইউনিয়ন কাকে বলে?
শ্রমিক-মালিক, শ্রমিক-শ্রমিক, মালিক-মালিক এর সম্পর্ক নিয়ন্ত্রনের জন্য গঠিত যে সংগঠন, তা হল ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন।
কোন নির্দিষ্ট শ্রমপেশার শ্রমিক কর্মচারীদের স্বার্থ রক্ষায় গঠিত নিবন্ধিত সংগঠন হচ্ছে ট্রেড ইউনিয়ন।
ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন ৪ ধরনের
১. বেসিক ইউনিয়ন। বেসিক ইউনিয়ন ২ ধরনের ১. প্রাতিষ্ঠানিক ২. অপ্রাতিষ্ঠানিক/প্রতিষ্ঠানপুঞ্জ।
২. পেশা ভিত্তিক ফেডারেশন/ক্রাফট ফেডারেশন। একই প্রকারের শিল্পে বা পেশায় কমপক্ষে ৫টি বেসিক ইউনিয়ন মিলে পেশাভিত্তিক ফেডারেশন গঠিত হয়।
৩. জাতীয় ফেডারেশন বিভিন্ন পেশার ২০ বা ততোধিক ট্রেড ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনকে জাতীয় ফেডারেশন বলা হয়।
৪. কনফেডারেশন। ১০টি জাতীয় ফেডারেশনের সমন্বয়ে কনফেডারেশন গঠিত হয়।
- ট্রেড ইউনিয়নের গঠনের উদ্দেশ্য
ট্রেড ইউনিয়নকে নির্দিষ্ট করে শ্রমিকদের জন্য ২ টি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ক) শ্রমিকের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা/সুবিধা প্রাপ্তি
– চাকুরীর নিরাপত্তা: নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র আদায়, কর্মঘন্টা, কাজের পরিবেশ তৈরী, বোনাস, ইনক্রিমেন্ট, বেতন ও ভবিষ্যৎ তহবিল গঠন।
– শ্রম আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা, দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা, প্রশিক্ষণ ও স্বাস্থ্য রক্ষায় ভূমিকা পালন।
খ) সামাজিক নিরাপত্তা: কর্মীর নৈতিক উন্নতি সাধন, অসামাজিক কর্মঘন্টা থেকে বিরত রাখা, শ্রমিকদের সন্তানদের লেখা-পড়া, বিয়ে-শাদী দেওয়া, প্রয়োজনীয় কল্যাণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।
এছাড়া শ্রমিক শ্রেণীর মানউন্নয়ন, শ্রমিক শ্রেণীকে সংগঠিত করা, অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা, শ্রমিকদের অভাব পূরণ করা কিংবা আর্থিক অস্বচ্ছলতা দূর করা, শ্রম অঙ্গনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি, মতামত দেওয়া এবং পরামর্শ দেওয়ার স্বাধীনতা, রাজনৈতিক প্রভাব সৃষ্টি, শ্রমিকদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি ও শ্রমিক মানসম্মত মজুরী নিশ্চিত করাও ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য।
শ্রমিক অধিকার লংঘনে ট্রেড ইউনিয়নের ভূমিকা:
ট্রেড ইউনিয়ন হল মূলত: শ্রমিকদের দ্বারা গঠিত একটি আইনস্বীকৃত সংগঠন যেটি শ্রমিকদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায়, জীবনামান উন্নয়নে, জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা বিধানে সবিশেষ ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি, মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ বজায় রাখার ক্ষেত্রেও ট্রেড ইউনিয়ন সেতুবন্ধন হিসাবে কাজ করে। ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিকদের মনে বিশেষ আস্থা ও বিশ্বাসের জন্ম দেয় এবং মালিকপক্ষের যাবতীয় অন্যায় আচরণ ও বিরূপ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে সাহায্য করে। বাস্তবক্ষেত্রে শ্রমিকদের দুর্বল মনোবল, চাকুরী হারানোর আশংকা, মালিকের স্বেচ্ছাচারী আচরণের কারণে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নের দ্বারস্থ হয়। ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিকদের পাশে দাড়ায়, মানুষ হিসাবে তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করে। শ্রমিকের মজুরী, ছুটি, বোনাস, গ্র্যাচুয়িটি, পেনশন, ক্ষতিপূরণ, ওভারটাইম,বকেয়াসহ চুক্তিভিত্তিক ও আইনসঙ্গত সকল প্রাপ্য আদায়, শ্রমিকের জন্য শোভন কাজ ও কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ শ্রমিককে সাংগঠনিক ও আইনী সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন একটি অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে।
ট্রেড ইউনিয়ন সম্প্রসারণ
সম্প্রসারণ বলতে যা বুঝায়:
১. তৃনমূল পর্যায়ে ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম বিস্তৃতকরণ অর্থ্যাৎ ট্রেড ভিত্তিক শিল্প, কল-কারখানা, গ্যারেজ, ষ্ট্যান্ড, প্রতিষ্ঠান, সংস্থার মাঝে টেড ইউনিয়ন কাজের বিস্তৃতি।
২. সকল পেশায় ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা এবং “যত ট্রেড তত ইউনিয়ন” এই শ্লোগানকে ধারণ করে সকল ট্রেড ভিত্তিক একক ইউনিট গঠন এবং এর মাধ্যমে ওয়ার্ড, থানা শাখা বৃদ্ধি করে ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনকে সম্প্রসারিত করা।
৩. সকল পেশা/ট্রেডের শ্রমিকদের মাঝে প্রভাব সৃষ্টি এবং আন্দোলনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার পরিবেশ তৈরী করা।
সম্প্রসারণ করার প্রক্রিয়া:
১. পরিকল্পনা গ্রহন ও বাস্তবায়ন
২. নেতৃত্ব তৈরী ও দক্ষতা বৃদ্ধি
৩. আর্থিক স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জন
পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজনীয় দিক:
যে কোন পরিকল্পনা গ্রহণে SMART টেকনিক ব্যাবহার অতীব কার্যকর। ট্রেড ইউনিয়ন সম্প্রসারণেও এ পদ্ধতিকে সামনে রাখা প্রয়োজন।
S=Specific বা সুনির্দিষ্ট, M=Measurable বা পরিমাপ যোগ্য, A=Achievable বা অর্জন যোগ্য, R=Realistic বা বাস্তবধর্মী, T=Time frame বা সময় কাঠামো
এ টেকনিককে সামনে রেখে ট্রেড ইউনিয়ন সম্প্রসারণে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।
১. প্রাতিষ্ঠানিক ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন করার মত অবস্থা তৈরী হয়েছে এমন প্রতিষ্ঠান/ফ্যাক্টরী চিহ্নিত করা।
২. অপ্রাতিষ্ঠানিক/প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন করার মত অবস্থা তৈরী হয়েছে এমন উপজেলা/থানা ও পেশা চিহ্নিত করা।
৩. টার্গেটকৃত পেশার সম্ভাব্য শ্রমিক সংখ্যা জানা।
৪. যাদেরকে নিয়ে ইউনিয়ন গঠন করা হবে সে সকল দায়িত্বশীল নির্ধারণ বা বাছাই করা।
৫. বিরোধী শক্তির তৎপরতা বা বিরোধী ইউনিয়ন সমূহের তৎপরতা সামনে রাখা।
৬. অর্থনেতিক অবস্থা সামনে রাখা।
৭. Capacity (ধারণ ক্ষমতা) ও Capability (সামর্থ্য) মূল্যায়ন করা।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় দিক:
পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিম্নোক্ত ৫টি দিক গুরুত্বপূর্ণ- ১. Executive plan (কার্যকরী পরিকল্পনা) ২. Work distribution (কর্মবন্টন) ৩. Work review (পর্যালোচনা) ৪. Reporting (রিপোর্টিং) ও ৫. Supervision (তত্ত্বাবধান)। এই দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে ট্রেড ইউনিয়ন সম্প্রসারণে নিম্নোক্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরী।
১. ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ। (৩ মাস, ৬ মাস কিংবা ১ বছর হতে পারে)।
২. সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের মাঝে কর্মবন্টন করে দেওয়া।
৩. টার্গেটকৃত পেশায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডি-ফরম পূরণ করা। এ ক্ষেত্রে ডি-ফরমের সাথে শ্রমিকদের ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।
৪. ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে পেশাভিত্তিক কমিটি ও ইউনিট গঠন করা।
৫. নিয়মিত তত্ত্বাবধান, সার্বক্ষনিক Monitoring এবং অগ্রগতি মূল্যায়ন করা।
৬. টার্গেটকৃত পেশায় দাওয়াতী কাজ বৃদ্ধি করা এবং দাওয়াত প্রাপ্ত শ্রমিকদের পরিকল্পিতভাবে সংগঠিত করা।
৭. ব্যাপক ভিত্তিক সেবামূলক কর্মসূচী গ্রহন করা
৮. প্রভাবশালী, দক্ষতাসম্পন্ন ও নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ বাড়ানো
৯. নেতৃত্বের গুনাবলী ও গণমুখী চরিত্র সম্পন্ন জনশক্তি তৈরি করা
১০. পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সাথে সম্পৃক্ত মানসম্মত জনশক্তি খুঁজে বের করা।
১১. নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে প্রয়োজণীয় সাপোর্ট প্রদান করা
১২. নেতৃবৃন্দের সচেতন দৃষ্টি রাখা
নেতৃত্ব ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় দিক:
১. সাহসী ও নেতৃত্বের গুনাবলী সম্পন্ন শ্রমিকদের বাছাই করা।
২. ইউনিয়নে নেতৃত্ব দেয়ার মত মানসম্পন্ন জনশক্তিকে টার্গেট করা।
৩. একজন নয় একটা গ্রুপকে টার্গেট করা এবং ধারাবাহিক প্রশিক্ষনের আওতায় নিয়ে আসা।
৪. টার্গেটকৃতদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং নিয়মিত সাহচর্য প্রদান করা।
৫. সাংগঠনিক মানে নিয়ে আসার চেষ্টা করা।
৬. দায়িত্ব দিয়ে নেতৃত্বের বিকাশ সাধনের সুযোগ করে দেয়া
৭. শ্রম আইন, শ্রম বিষয়ক জ্ঞান ও ইসলামী শ্রমনীতি বিষয়ক সম্যক ধারনা প্রদান করা
৮. টার্গেটকৃত পেশার জন্য বাছাইকৃত নেতৃবৃন্দকে সংশ্লিষ্ট পেশার সমস্যা ও সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যত করণীয় সংক্রান্ত উপরে ধারণা প্রদান করা।
আর্থিক স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জনে প্রয়োজনীয় দিক:
আর্থিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত না হলে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও পরিচালনা দুরূহ ব্যাপার। এজন্য ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণে আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন জরুরী। এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহন করা যেতে পারে-
১. পরনির্ভরশীলতার মানসিকতা পরিহার করে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার মানসিকতা পোষণ করা
২. প্রস্তাবিত ট্রেড ইউনিয়নের সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত ইউনিয়ন চাঁদা সংগ্রহের পদক্ষেপ গ্রহন করা
৩. নিয়মিত আয়ের উদ্যোগ গ্রহন করা
৪. শুভাকাংখী বৃদ্ধি করা
ট্রেড ইউনিয়ন মজবুতিকরন
মজবুতি অর্জন বলতে যা বুঝায়:
১. ট্রেড ইউনিয়নের সাংগঠনিক দুর্বলতা পরিহার করে ক্রমশ শক্তি অর্জণ করে শ্রমজীবি মানুষের আস্থা অর্জন করা।
২. ট্রেড ইউনিয়নের শক্তিশালী কাঠামো তৈরী হওয়া।
৩. ট্রেড ইউনিয়নের কাজ সর্বত্র জালের মত ছড়িয়ে থাকা।
৪. প্রতিটি ইউনিয়নকে ইসলামী আন্দোলনের জন্য শক্তিশালী Field হিসেবে তৈরি করা।
মজবুত ইউনিয়নের বৈশিষ্ট্য:
১. নেতৃত্ব হবে গতিশীল ও স্বচালিত
২. নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা থাকবে। একক ব্যক্তি কেন্দ্রিক ইউনিয়ন হবে না। A set of leadership থাকবে।
৩. সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। মতানৈক্য, মতপার্থক্য, চিন্তার বিভাজন, গ্রুপিং থাকবেনা।
৪. Team spirit থাকা
৫. চিন্তা ঐক্য ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা
৬. প্রয়োজনীয় দাওয়াতী উপকরণ ও সমৃদ্ধ পাঠাগার থাকা।
৭. আর্থিক স্বয়ংসম্পূর্নতা থাকা
৮. প্রভাবশালী ও নেতৃত্বের গুনাবলী সম্পন্ন শ্রমিকদের ইউনিয়নের সাথে সম্পৃক্ত থাকা
৯. ব্যাপক শ্রমিক বান্ধব ও কল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা
১০. শ্রমিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ধারাবাহিক আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখা
১১. ইউনিয়নের নিজস্ব উদ্যোগে প্রতি বছর রিটার্ন দাখিল করার সক্ষমতা।
১২. নেতৃত্ব ও কর্মীদের মধ্যে আন্তরিক ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকবে। প্রতিপক্ষ, প্রতিহিংসামূলক মনোভাব না থাকা।
১৩. পারস্পারিক মতানৈক্য, মতবিরোধ ও চিন্তার ভিন্নতা পরিহার করে এক অভিন্ন চিন্তার আলোকে ইউনিয়নের কার্যক্রম পরিচালিত হওয়া।
১৪. পারস্পরিক পরামর্শ ও আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহন করা।
১৫. ইউনিয়নে সাংগঠনিক মৌলিক প্রোগ্রাম ও তারবিয়াতী বৈঠকাদী নিয়মিত বাস্তবায়ন হওয়া।
১৬. নিয়মিত সাধারণ সদস্য, কর্মী ও সদস্য বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত থাকা।
১৭. ইউনিয়নভূক্ত শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান ও শ্রমিক সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
ট্রেড ইউনিয়ন মজবুতি করণে নেতৃত্বের ভূমিকা:
১. প্রত্যেক ইউনিয়নকে তাদের অবস্থা ও গুরুত্বের আলোকে আলাদা সাংগঠনিক মর্যাদা দিয়ে তত্ত্ববধান করা এবং জবাবদিহি নেওয়া।
২. প্রতি মাসে ইউনিয়নের কার্যক্রমের রিপোর্ট তৈরী ও উর্ধতনে জমা প্রদানের ক্ষেত্রে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহন করা
৩. প্রত্যেক ইউনিয়নের অবস্থার আলোকে মাসিক চাঁদা ধার্য্য করা এবং ট্রেড ইউনিয়ন সমূহকে উক্ত ধার্য্যকৃত চাঁদা পরিশোধে অভ্যস্ত করে গড়ে তোলা।
৪. ট্রেড ইউনিয়ন সমূহকে বছরের শুরুতে এফিলিয়েটভূক্ত ফেডারেশনের বার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে স্ব-স্ব ইউনিয়নে বার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহন করা ও জমা দেওয়া নিশ্চিত করা।
৫. ট্রেড ইউনিয়ন সভাপতি/সেক্রেটারী কমপক্ষে একজনকে সংগঠনের রুকন (সদস্য) মান নিশ্চিত করা।
৬. প্রতি বছর কমপক্ষে একবার ইউনিয়ন সমূহের অবস্থান মূল্যায়নের জন্য ফেডারেশনের উদ্যোগে “ট্রেড ইউনিয়ন সাংগঠনিক দশক” পালন করা। দশকে সকল ইউনিয়নের সদস্য রেজিষ্ট্রার, চাঁদা সংগ্রহের রেজিষ্ট্রার, কার্যবিবরণী খাতা, রিটার্ন দাখিলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাছাই বাছাই করা ও যাবতীয় কার্যক্রমের খোঁজ খবর নেওয়া।
৭. ফেডারেশনের উদ্যোগে ২/৩ মাস অন্তর ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বসে ইউনিয়নের সামগ্রীক কার্যক্রমের পর্যালোচনা করা।
৮. বছরে একবার ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দকে নিয়ে “ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিনিধি/সভাপতি সম্মেলনের” আয়োজন করা।
৯. ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর অভ্যন্তরীণ “দাওয়াতী দশক” পালন করা যেতে পারে। দশকের স্ব-স্ব ট্রেড ইউনিয়ন তাদের ইউনিয়নের সদস্য বৃদ্ধির প্রতি অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করবে।
১০. প্রত্যেক ইউনিয়নের একসেট নেতৃত্ব তৈরী করা। যাতে কোন ব্যক্তি বিশেষের উপর ইউনিয়নের নির্ভরশীলতা তৈরী না হয়। কিংবা নেতৃত্ব সংকটের কারণে ইউনিয়নের কার্যক্রম ব্যহত হয়।
১১. বছরে কমপক্ষে একবার ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিচালনা সংক্রান্ত যাবতীয় আইনী নির্দেশনা ও শ্রম আইন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন প্রদানে ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহন করা।
১২. প্রভাবশালী শ্রমিক, শ্রমিক নেতা, মালিক, বিশেষ করে শ্রমিক সমাজের চালিকা শক্তি হিসাবে ভূমিকা পালন কারীদের ইউনিয়নের প্রভাব বলয়ের নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহন করা।
১৩. চৌকস শ্রমিক নেতা ও কর্মী গঠনে পরিকল্পিত টার্গেট ভিত্তিক দাওয়াতী কাজ করা।
১৪. ইউনিয়নভূক্ত জনশক্তির মানউন্নয়নে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহন করা।
১৫. জনশক্তির মৌলিক মানবীয় গুনাবলী ও প্রতিভা বিকাশে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা।
১৬. শ্রমিক সেবামূলক কাজের মাধ্যমে শ্রমিক মহলে ইউনিয়নের প্রভাব সৃষ্টি করা।
১৭. তৃনমূল পর্যন্ত ইউনিয়নের কার্যক্রম বিস্তৃত করা।
১৮. ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সাথে ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা। ইউনিয়ন সমূহকে আন্দোলনের সত্যিকার মেজাজ ও পরিবেশের আলোকে গড়ে তোলা।
১৯. ইউনিয়নের সাথে সম্পৃক্ত সকল নেতৃবৃন্দ ও জনশক্তির পারস্পরিক মোয়ামেলাত ও ভ্রাতৃত্ববোধ ঠিক রাখা।
২০. পরিকল্পিতভাবে ইউনিয়ন সমূহের নেতৃত্বে প্রাক্তন ছাত্রনেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করা।
সম্প্রসারণ ও মজবুতি অর্জনে প্রতিবদ্ধকতা:
১. নেতৃত্বের সংকট
২. যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহনের অভাব
৩. দক্ষ জনশক্তির সংকট
৪. জনশক্তির পেরেশানির অভাব
৫. আগ্রহ-উদ্দীপনার অভাব
৬. অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা
৭. সুনির্দিষ্ট সংগঠন পদ্ধতি না থাকা
৮. সামগ্রীক সহযোগিতার অভাব
৯. শ্রমিক বান্ধব কর্মসূচী স্বল্পতা
১০. নেতৃত্বের ইন-আউট বেশী হওয়া